ইলেকট্রিসিটি

ইলেকট্রিসিটি বা বিদ্যুৎ এমন এক প্রকার অদৃশ্য শক্তি, যাকে এক শক্তি থেকে অন্য শক্তিতে রুপান্তর করা যায়। ইহার সাহায্যে আলো, তাপ, শব্দ, গতি ইত্যাদি উৎপন্ন করে বাস্তব অনেক কার্যাদি সম্পন্ন করা হয়ে থাকে।

ইলেকট্রিসিটি বা বিদ্যুতের ইতিহাস: বিদ্যুতের উৎপত্তি হয়েছে গ্রীক শব্দ ইলেকট্রন হতে। ইলেকট্রন শব্দের অর্থ হলো অ্যাম্বার। ৬০০ সালে গ্রিক দার্শনিক থ্যালেস লক্ষ্য করলেন যে, অ্যাম্বারকে রেশমি কাপড় দ্বারা ঘর্ষন করলে এর মধ্যে একটি অদৃশ্য শক্তির উদ্ভব হয় এবং অ্যাম্বর ছোট ছোট কাগজের টুকরাগুলোকে আকর্ষন করছে। অনুরুপভাবে আমরা দেখতে পাই যে চিরুনী দিয়ে চুল আছড়িয়ে চিরুনীটি ছোট ছোট কাগজের টুকরার কাছে আনলে এটা কাগজের টুকরাগুলোকে আকর্ষন করছে। মূলত: যে অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে এইরুপ ঘটে থাকে তাকেই বিদ্যুৎ ব ইলেকট্রিসিটি বলা হয়ে থাকে।

                                                                         ২. চলমান বিদ্যুৎ

ঘর্ষনের ফলে সৃষ্ট বিদ্যুৎকেই স্থির বিদ্যুৎ বলে। এই বিদ্যুৎ যে স্থানে উৎপন্ন হয়, সে স্থানে রয়ে যায় কোনক্রমে উৎপন্ন স্থান ত্যাগ করে না। তাই এই প্রকার বিদ্যুৎকে স্থির বিদ্যুৎ বলে।

 স্থির বিদ্যুৎ এর মধ্যে দুইধরনের চার্জ বিদ্যমান থাকে, একটি হলো পজিটিভ চার্জ (+)অপরটি নেগেটিভ চার্জ(-)।

উপরের চিত্রগুলো স্থির বিদ্যুৎ এর উদাহরন। ১ম চিত্রে পজিটিভ চার্জযুক্ত দুটি বেলুন পরস্পরকে বিকর্ষন করছে, কিন্তু বিপরীত চার্জযুক্ত বেলুনকে আকর্ষন করছে। ২য় চিত্রে ১ম  অবস্থায় কাপড়ের টুকরা এবং প্লাসটিক দন্ডের মধ্যে কোন প্রকার চার্জ থাকেনা কিন্তু যখনই কাপড়ের টুকরা দিয়ে প্লাসটিক দন্ডের সাথে ঘর্ষন সম্পন্ন হলো তখনি  কাপড়ের টুকরাটি নেগেটিভ চার্জ এবং প্লাসটিক দন্ডটি পজিটিভ চার্জ প্রাপ্ত হলো। ৩য় চিত্রে মেঘের ঘর্ষনের ফলে সৃষ্ট বিদ্যুৎ  কিভাবে ভুমিতে নেমে আসে তা দেখানো হলো।

যে বিদ্যুৎ   উৎপন্ন স্থানে স্থির না থেকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় প্রবাহিত হয় তাকে চল বিদ্যুৎ বলে।

               ১. একমুখী বিদ্যুৎ (ডিসি)

               ২. পরিবর্তী বিদ্যুৎ (এসি)

যে কারেন্টের মান ও দিক সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় না, তাকে একমুখী বা ডিসি প্রবাহ বলে।

যে কারেন্টের মান ও দিক সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় , তাকে পরিবর্তী বিদ্যুৎ  বা এসি প্রবাহ বলে।

কোন বর্তনীর মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহের ফলে কতগুলো লক্ষণ বা ফলাফল প্রকাশ পায়, তাকে ইলেকট্রিসিটির ইফেক্ট বা প্রতিক্রিয়া বলে।

১.তাপীয় ফল:– পরিবাহীর মধ্য দিয়ে যখন বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়, তখন পরিবাহীটি উত্তপ্ত হয় এবং বিদ্যুৎ এর অপচয় ঘটে। এইক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক শক্তি তাপ শক্তিতে রুপান্তরিত হয়েছে বিধায় এটা বিদ্যুৎ এর তাপীয় ফল। উদাহরনস্বরুপ বলা  যায় যে, বৈদ্যুতিক ল্যাম্প থেকে আলোক বিচ্ছুরন, হিটার থেকে তাপ বিকিরন ইত্যাদি এসবই বিদ্যুৎ  এর তাপীয় ফল।

Scroll to Top